অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : ঢাকার কেরানীগঞ্জে হাসনাবাদ ও কদমতলী এলাকাসহ ৭টি স্ট্যান্ডে প্রায় ৯ হাজার সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও ৭ হাজার ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল করছে। এলাকার ২৫ জন চাঁদাবাজ বিশেষ স্টিকার ব্যবহার করে জমা পরিশোধ (জিপি) নামে মাসে প্রায় কোটি টাকা চাঁদা আদায় করার অভিযোগ করছে গাড়ি মালিক এবং চালকরা।
সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রতিদিন সন্ধ্যায় ওই সব স্ট্যান্ডে অটোরিকশা চালকদের ৭৫ টাকা ও রিকশা চালকদের ৩০ করে চাঁদার টাকা পরিশোধ করতে বাধ্য করা হয়।
চালকরা ও গাড়ি মালিকরা জানান, চাঁদার টাকা তারা জিপি নাম দিয়ে অভিনব কায়দায় বিশেষ স্টিকার দিয়ে প্রতিদিন লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে চাঁদাবাজরা। জিপি নামের অর্থ হলো জমা পরিশোধ। কোনো অটোরিকশা এবং রিকশা চালক একদিন জিপি না দিতে পারে পরদিন ওই গাড়ি আর স্ট্যান্ডে আসতে দেওয়া হয় না। জানুয়ারি মাসের স্টিকার হলো (১) আর ডিসেম্বর মাসের স্টিকার হলো (১২) এরকম করে ফেব্রুয়ারি (২) মার্চ (৩) নাম্বারে স্টিকার দুই হাজার টাকা অগ্রিম দিয়ে নিতে হয়।
নাম প্রকাশ অনিচ্ছুক বেশ কয়েক জন অটোরিকশা এবং রিকশা মালিক জানায়, হাসনাবাদ এলাকায় তিন হাজার গাড়ি থেকে জিপি তুলছে ফরহাদ, আক্তার ও বাবু। কদমতলী থেকে দুই হাজার সিএনজি ও ১৫০০ ব্যাটারিচালিত রিকশা থেকে জিপি তুলছেন মিলন, শাহ জাহান, ইয়াসিন, রাসেল, আতাউর, বনি আমিন, ইমু, রুবেল, ডিপটি ও নাসির। রোহিতপুর স্ট্যান্ডে দুই হাজার ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ১৫০০ অটোরিকশা থেকে চাঁদা তুলছে সায়েম ও নুরু মিয়া। চুনকুটিয়া স্ট্যান্ডে ২০০ সিএনজি ও ৩০০ রিকশা এবং আকাশ পরিবহনের ২০০ বাস, দিশারি পরিবহনের ২০০ বাস এবং ৫০ নগর পরিবহণ থেকে চাঁদা তুলছে সুমন, ইমু ও সেলিম।
একইভাবে খোলামুড়া স্ট্যান্ডে ৬০০ অটোরিকশা এবং ৫০০ ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা থেকে চাঁদা তুলছে আউয়াল ও সিপলু। আটি বাজার স্ট্যান্ডে ৬০০ অটোরিকশা ও ৪০০ ব্যাটারিচালিত রিকশা থেকে চাঁদা তুলছে আউয়াল ও রিপন। জিনজিরা স্ট্যান্ড থেকে ৩০০ অটোরিকশা ও ৩০০ রিকশা থেকে চাঁদা তুলছে দিনু ও ডিপটি।
এব্যাপারে র্যাব-১০ এর অধিনায়ক অ্যাডিশনাল ডি আইজি ফরিদ উদ্দিন জানান, কেরানীগঞ্জে চাঁদাবাজদের ওই তালিকা তৈরি করে মাঠে নেমেছে র্যাব -১০।
তিনি জানান, কেরানীগঞ্জে চাঁদাবাজি, ছিনতাই, ডাকাতি ও মাদক বিক্রি বন্ধ করতে অভিযান অব্যাহত আছে। গত নভেম্বর মাসে র্যাব ১০ এর সদস্যরা ১২ ছিনতাইকারী, ২৫ জন মাদক কারবারী ও ১১ জন ডাকাতকে আটক করে র্যাব। বিজয়ের মাসে সকল চাঁদাবাজ ও মাদক ব্যবসায়ীদের তালিকা ধরে তাদের আটক করা হবে। ইতোমধ্যে উল্লেখিত চাঁদাবাজদের আটক করতে র্যাব সদস্যদের বিভিন্ন স্ট্যান্ডে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কেরানীগঞ্জ সার্কেল শাহাবুদ্দিন কবির বলেন, গত বছর থেকে এ পর্যন্ত এসপি স্যারের নির্দেশে ঢাকা জেলায় ২৩ জন চাঁদাবাজকে আটক করে নিয়মিত মামলা দিয়ে বিজ্ঞ আদালতে পাঠানো হয়েছে।
তিনি বলেন, ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার আসাদুজ্জামান স্যারের নির্দেশে আমরা জেলায় চাঁদাবাজি, রাহাজানি, মাদক ছিনতাই ও ডাকাতদের স্থান হতে দিবো না। এছাড়া জেলায় যেই অপকর্ম করবে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেবে পুলিশ
Leave a Reply